মনে কি পড়ে সেই অঙ্গিকার নামার ইতিহাস?
না-কি ভুলেই গেছো এই ভার্চুয়াল জগতের মোহে।
—যখন মহাশূন্যের চাদর জড়িয়ে,
ঘুমিয়েছিলাম অস্তিত্বের অতীতে।
হঠাৎ প্রকম্পিত হয়ে, ঘুম থেকে জেগে উঠে দেখি
—শতো, সহস্র আত্মার সমাবেশ!
ব্রুনেরা সবাই অপেক্ষার দীর্ঘ রাত পাড়ি দিয়ে,
একত্ববাদের মিছিলে দাঁড়িয়েছে।
সমস্বরে চিৎকার করে বলেছিলো— আহাদ! আহাদ! আহাদ!
মিছিল শেষ হলো।
নিক্ষেপিত হলো পৃথিবীতে ভ্রূণের বহর,
এরপর বিদেহী আত্মায় আসে দেহের স্পন্দন।
কেউ হয়ে ওঠে বিশ্বাসের কবি;
কেউবা অবিশ্বাসের ঝাপি খুলে কুফরির ফেরি করে চললো!
অস্বীকার করে বসলো—সেই প্রাচীণ অঙ্গীকার!
বিশ্বাসঘাতক বলব? গাদ্দার? না-কি প্রতারক?
[কবিতাটি সুরা আ’রাফের ১৭২ নং আয়াতের অংশ। তাফসীর গ্রন্থে এসেছে, আল্লাহ তা'য়ালা আদম আ. -কে সৃষ্টির পর তার ঔরসে যতো সন্তান-সন্তুতি পৃথিবীতে আসবে, তাদের সকল (রুহকে) এক জায়গায় একত্রিত করেন। তখন তাদের সকলকে পিঁপড়ের মতো ক্ষুদ্রাকৃতির লাগছিলো। তিনি তাদের থেকে প্রতিশ্রুতি নেন যে, “আমি কি তোমাদের প্রভু নই?” তারা সমস্বরে জবাব দিয়েছিলো “কেন নয়! অবশ্যই আপনি আমাদের প্রভু” সুরা আ'রাফ আয়াত :১৭২। এই স্বীকারোক্তি দ্বারা তারা যেন স্বীকার করে নিলো যে, আল্লাহর সমস্ত আদেশ-নিষেধ বিনাবাক্যে পালন করবে। অতঃপর আল্লাহ তা'য়ালা সেই রুহ (ভ্রূণগুলোকে) পৃথিবীতে পাঠাতে থাকেন। এখানে এসে তাদের মা-বাবা, চারদিকের পরিবেশ তাদের সেই প্রাচীণ অঙ্গীকারকে ভুলিয়ে দেয়। কেউ হয়ে যায় ইহুদী, খ্রীষ্টান। কেউবা মুসলিম।]
সুরা আ’রাফে আল্লাহ তা’য়ালা বলেন—
وَ اِذۡ اَخَذَ رَبُّکَ مِنۡۢ بَنِیۡۤ اٰدَمَ مِنۡ ظُهُوۡرِهِمۡ ذُرِّیَّتَهُمۡ وَ اَشۡهَدَهُمۡ عَلٰۤی اَنۡفُسِهِمۡ ۚ اَلَسۡتُ بِرَبِّکُمۡ ؕ قَالُوۡا بَلٰی ۚۛ شَهِدۡنَا ۚۛ اَنۡ تَقُوۡلُوۡا یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ اِنَّا کُنَّا عَنۡ هٰذَا غٰفِلِیۡنَ
❝ স্মরণ কর, যখন তোমার প্রতিপালক আদম সন্তানদের পৃষ্ঠ হতে তাদের বংশধরদের বের করলেন আর তাদেরকেই সাক্ষী বানিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, ‘আমি কি তোমাদের প্রতিপালক নই?’ তারা বলল, ‘হ্যাঁ; এ ব্যাপারে আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি।’ (এটা এজন্য করা হয়েছিল) যাতে তোমরা ক্বিয়ামাতের দিন না বল যে, ‘এ সম্পর্কে আমরা একেবারেই বে-খবর ছিলাম’। ❞ সুরা আ’রাফ আয়াত নং ১৭২ (অনুবাদ, তাইসীরুল)
[বিস্তারিত দেখুন— সুরা আ’রফের ১৭২ নং আয়াতের তাফসীর/মা'আরেফুল কুরআন]
No comments:
Post a Comment